তেলের দাম কমাতে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের চেষ্টাকে ‘অনর্থক’ বলছে ভারত

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমাতে এশিয়ার চার বৃহৎ অর্থনীতির দেশকে মজুত তেল ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্টের এ আহ্বানে এখন পর্যন্ত শুধু চীন সাড়া দিয়েছে, আর তাতেই গত বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) বিশ্ববাজারে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলারের নিচে নেমে যায়, যা ছিল গত সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। তবে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রচেষ্টাকে অনর্থক বলে দাবি করেছে ভারত। তাদের মতে, দেশের মজুত থেকে তেল ব্যবহার বিশ্ববাজারে দামের ওপর খুব সামান্যই প্রভাব ফেলবে।

চীন মজুত তেল ব্যবহারের খবর ছড়িয়ে পড়ার পরপরই গত বুধবার (১৭ নভেম্বর) ভারতের তেল মন্ত্রী হরদ্বীপ সিং পুরি ব্লুমবার্গ টিভিকে বলেন, কৌশলগত তেল মজুত কখনোই এমন পরিস্থিতির জন্য ছিল না… যদি ভূমিকম্প হয়, বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের প্রাদুর্ভাব হয় এবং তেল সরবরাহ বন্ধ থাকে, এটি তেমন কোনো দুযোর্গকালীন পরিস্থিতির জন্য।

তবে জো বাইডেন এবং চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে সমঝোতার পর গত বৃহস্পতিবার ছয় সপ্তাহের মধ্যে প্রথমবারের মতো অপরিশোধিত তেলের দাম ৮০ ডলারের নিচে নেমেছে। বিশ্ববাজারে চাপ কমাতে চীন নিজেদের তেল মজুতের কিছু অংশ স্থানীয় বাজারে ছাড়তে রাজি হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবর অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্র এবং এশিয়ার চীন, জাপান, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া হলো বিশ্বে জ্বালানি তেলের বৃহত্তম পাঁচ ভোক্তা। এদের দৈনিক চাহিদা ৩ কোটি ৯০ লাখ ব্যারেলের মধ্যে ভারতের অংশ ৫০ লাখ ব্যারেল। পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্রের মজুত যেখানে ৭১ কোটি ৪০ লাখ ব্যারেল, চীনের ৪৭ কোটি ৫০ লাখ এবং জাপানের ৩২ কোটি ৪০ লাখ ব্যারেল, সেই তুলনায় ভারতের মজুতও অনেক কম। ভারতের হাতে বর্তমানে ৩ কোটি ৬৯ লাখ ব্যারেল (তথ্য: উইকিপিডিয়া) তেল মজুত রয়েছে, যা দেশটির আইন অনুসারে বাজারে মূল্যবৃদ্ধির কারণে ব্যবহার সম্ভব নয়।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার দাবি, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে নিজ দেশে বেশ চাপের মুখে রয়েছেন বাইডেন। সেই চাপ কমানোর পাশাপাশি তেলের দাম কমানোর আহ্বানে সাড়া না দেওয়া ওপেক প্লাসকে (ওপেকভুক্ত ১৫ দেশ ও রাশিয়া) বিশেষ বার্তা পাঠানোর উদ্দেশ্যে এশীয় দেশগুলোকে তেলের মজুত ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

READ  Londra potrebbe essere calda come Barcellona entro il 2050 - The European Sting - Notizie critiche e statistiche su politica, economia, affari esteri, affari e tecnologia europei

ভারতের তেল মন্ত্রী ব্লুমবার্গ টিভিকে বলেছেন, আমি সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, রাশিয়ার মন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছি এবং তেলের উৎপাদন বাড়াতে চাপ দিয়েছি। পৃথক সাক্ষাৎকারে তিনি সিএনএন’কে বলেন, সেখানে ৫০ লাখ ব্যারেল তেল পড়ে রয়েছে, কিন্তু ওরা (ওপেক) উৎপাদন করছে না।

আবুধাবিতে তেল রপ্তানিকারক এবং ভোক্তা দেশগুলোর জ্বালানি মন্ত্রীদের মধ্যে সদ্য সমাপ্ত বৈঠকে জানানো হয়েছে, বিশ্ববাজারে তেলের দাম যেমনই থাক, ওপেক বর্তমান উৎপাদনের মাত্রাই বজায় রাখবে।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে, এ অবস্থায় ভারত সর্বোচ্চ বিশ্ববাজারে তেলের দাম হাতের নাগালে থাকবে তার আশা করতে পারে। করোনার আঘাত সামলে অর্থনীতি ডানা মেলার মুহূর্তে এর বেশি কিছু করার সাধ্য আপাতত তাদের নেই।

কেএএ/এএসএম

করোনা ভাইরাসের কারণে বদলে গেছে আমাদের জীবন। আনন্দ-বেদনায়, সংকটে, উৎকণ্ঠায় কাটছে সময়। আপনার সময় কাটছে কিভাবে? লিখতে পারেন জাগো নিউজে। আজই পাঠিয়ে দিন – [email protected]

Lascia un commento

Il tuo indirizzo email non sarà pubblicato. I campi obbligatori sono contrassegnati *